প্রকাশনা তথ্য
প্রথম সংস্করণ
বৈশাখ ১৩৬৩
প্রথম বৈদ্যুতিন সংস্করণ
পৌষ ১৪২৮, জানুয়ারী ২০২২
প্রচ্ছদ
প্রকাশক
সুনীল আকাশ আত্মপ্রকাশ কেন্দ্র (SAAP) প্রকাশনা,
1215-40, Gordonridge Place,
Scarborough, Ontario : M1K 4H8, Canada.
লেখক সম্পর্কে
গল্প আছে—এক ভদ্রলোক শেষ পর্যন্ত মলমূত্রে নোংরা হয়ে মারা গিয়েছিলেন। তাকে পরিষ্কার করবার জন্যে এক মেথর ডাকা হল। মেথর বলল, ময়লা পরিষ্কার করা তার পেশা বটে কিন্তু মড়া পরিষ্কার করা তার কাজ নয়—সে কাজ মুদ্দোফরাশের। তখন ডাকা হল মুদ্দোফরাশকে। মুদ্দোফরাশ বলল, হ্যাঁ মড়া পরিষ্কার করা তার কাজ বটে কিন্তু ময়লা পরিষ্কার করা তার কাজ নয়। সে কাজ মেথরের। সুতরাং তার দ্বারাও ভদ্রলাকের গতি হবে না।
মহা মুশকিল। কী করা যায়। শেষ পর্যন্ত পাড়ার মাতব্বরের মাথার বুদ্ধি খেলল—একজন ডাক্তারকে ডাকা যাক।
তাই ডাকা হল। ডাক্তার এলেন—মড়াও পরিষ্কার করলেন, ময়লাও পরিষ্কার করলেন। মেথরেরও কাজ করলেন, মুদ্দোফরাশেরও কাজ করলেন।
এই হল একজন ডাক্তারের পেশা—তার জীবন।
পৃথিবীর যত ক্লেদ, যত ব্যাধি—যত দৈন্য তাই নিয়েই তার কাজ। তার ভাগ্যে লেখা—তার সমস্ত কর্ম-জীবন কাটবে এই কদর্য পরিবেশে—এই রোগ আর দারিদ্রের ভিতরে।
আর শুধু কি তাই? তার আর্থিক সাচ্ছল্য নির্ভর করবে একদিকে সমাজের আধি-ব্যাধির ওপরে আর অন্যদিকে বিপন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের সামর্থ্যের ওপরে।
এই জীবন নিয়ে ডাক্তার বাঁচে কি করে? তার তো অমানুষ হয়ে যাবার কথা —পিশাচ হয়ে যাবার কথা। কিন্তু সবাই তো তা হয় না। কেন হয় না বলতে পারেন?
একবার গঙ্গাদেবী গিয়ে নারায়ণকে নালিশ করেছিলেন। পৃথিবীর যত পাপী সবাই গঙ্গাস্নান করে পাপমুক্ত হয়। কিন্তু সেই পাপীদের সংস্পর্শে এসে গঙ্গাদেবীর দেহে জ্বালা ধরে যায়—এর কি কোন উপায় নেই?
তার উত্তরে নারায়ণ গঙ্গাদেবীকে ভরসা দিয়েছিলেন—পাপীরা স্নান করে করুক। কিন্তু সাধু সন্তরাও গঙ্গাস্নান করেন। তাঁদের স্পর্শে গঙ্গাদেবীর উত্তপ্ত দেহ শীতল হবে।
সেই রকম বর বোধহয় সতু বদ্যিদের জাতভাইদের ওপরেও আছে। অন্তত সতু বদ্যির তাই মত।
আর সেই জন্যেই সতু বদ্যি যখন চোখ মেলে দেখে তখন কখনো হয়তো দেখতে পায় পাপীয়সী ভ্রষ্টা নারীর ভিতরে মহিমময়ী মাতৃমূর্তি, হয়তো পাগল ভূটকোর ভিতরে দেখে দরিদ্র গ্রামবাসীদের ত্রাণকর্তা—হয়তো দেহ-ব্যবসায়ী চাষীর মেয়ের ভিতরে দেখে কল্যাণী গৃহলক্ষ্মী, আবার হয়তো রকের আড্ডাবাজ বকাটে ছেলের ভিতরে দেখে পরম পিতার প্রতিমূর্তি।
সেই অমৃতের স্পর্শেই নাকি সতু বদ্যি এখনও বেঁচে আছে। আর আশা করছে আগামী যুগ যুগ ধরে সেই অমৃতই বাঁচিয়ে রাখবে সতু বদ্যি আর তার বংশধরদের।
সতু বদ্যি বলে সে নেহাতই জাত বদ্যির বংশ বলে তার মনে হয়েছে এ অমৃতের সন্ধান হয়তো আর কেউ পায়নি। সতু বদ্যিরা তো পুরুষানুক্রমে ক্লেদই ঘেঁটে এসেছে কিনা তাই। কিন্তু হয়তো এও হতে পারে যে, এ অমৃতের সন্ধান একচক্ষু হরিণের মত সতু বদ্যির কাছে নতুন হলেও জনসাধারণের কাছে নতুন নয়।
তবুও সতু বদ্যি এই অমৃতের সন্ধান সবাইকে দিয়ে রাখছে।
সবার যদি এ সন্ধান জানাও থাকে তাহলেও কোন ক্ষতি নেই।
কারণ অমৃতে তো অরুচি হয় না।
তাই ডাকা হল। ডাক্তার এলেন—মড়াও পরিষ্কার করলেন, ময়লাও পরিষ্কার করলেন। মেথরেরও কাজ করলেন, মুদ্দোফরাশেরও কাজ করলেন।
এই হল একজন ডাক্তারের পেশা—তার জীবন।
পৃথিবীর যত ক্লেদ, যত ব্যাধি—যত দৈন্য তাই নিয়েই তার কাজ। তার ভাগ্যে লেখা—তার সমস্ত কর্ম-জীবন কাটবে এই কদর্য পরিবেশে—এই রোগ আর দারিদ্রের ভিতরে।
আর শুধু কি তাই? তার আর্থিক সাচ্ছল্য নির্ভর করবে একদিকে সমাজের আধি-ব্যাধির ওপরে আর অন্যদিকে বিপন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের সামর্থ্যের ওপরে।
এই জীবন নিয়ে ডাক্তার বাঁচে কি করে? তার তো অমানুষ হয়ে যাবার কথা —পিশাচ হয়ে যাবার কথা। কিন্তু সবাই তো তা হয় না। কেন হয় না বলতে পারেন?
একবার গঙ্গাদেবী গিয়ে নারায়ণকে নালিশ করেছিলেন। পৃথিবীর যত পাপী সবাই গঙ্গাস্নান করে পাপমুক্ত হয়। কিন্তু সেই পাপীদের সংস্পর্শে এসে গঙ্গাদেবীর দেহে জ্বালা ধরে যায়—এর কি কোন উপায় নেই?
তার উত্তরে নারায়ণ গঙ্গাদেবীকে ভরসা দিয়েছিলেন—পাপীরা স্নান করে করুক। কিন্তু সাধু সন্তরাও গঙ্গাস্নান করেন। তাঁদের স্পর্শে গঙ্গাদেবীর উত্তপ্ত দেহ শীতল হবে।
সেই রকম বর বোধহয় সতু বদ্যিদের জাতভাইদের ওপরেও আছে। অন্তত সতু বদ্যির তাই মত।
আর সেই জন্যেই সতু বদ্যি যখন চোখ মেলে দেখে তখন কখনো হয়তো দেখতে পায় পাপীয়সী ভ্রষ্টা নারীর ভিতরে মহিমময়ী মাতৃমূর্তি, হয়তো পাগল ভূটকোর ভিতরে দেখে দরিদ্র গ্রামবাসীদের ত্রাণকর্তা—হয়তো দেহ-ব্যবসায়ী চাষীর মেয়ের ভিতরে দেখে কল্যাণী গৃহলক্ষ্মী, আবার হয়তো রকের আড্ডাবাজ বকাটে ছেলের ভিতরে দেখে পরম পিতার প্রতিমূর্তি।
সেই অমৃতের স্পর্শেই নাকি সতু বদ্যি এখনও বেঁচে আছে। আর আশা করছে আগামী যুগ যুগ ধরে সেই অমৃতই বাঁচিয়ে রাখবে সতু বদ্যি আর তার বংশধরদের।
সতু বদ্যি বলে সে নেহাতই জাত বদ্যির বংশ বলে তার মনে হয়েছে এ অমৃতের সন্ধান হয়তো আর কেউ পায়নি। সতু বদ্যিরা তো পুরুষানুক্রমে ক্লেদই ঘেঁটে এসেছে কিনা তাই। কিন্তু হয়তো এও হতে পারে যে, এ অমৃতের সন্ধান একচক্ষু হরিণের মত সতু বদ্যির কাছে নতুন হলেও জনসাধারণের কাছে নতুন নয়।
তবুও সতু বদ্যি এই অমৃতের সন্ধান সবাইকে দিয়ে রাখছে।
সবার যদি এ সন্ধান জানাও থাকে তাহলেও কোন ক্ষতি নেই।
কারণ অমৃতে তো অরুচি হয় না।
প্রকাশিত গ্রন্থ
সতু বদ্যির রোজনামচা (শ্রাবণ ১৩৬২)
সতু বদ্যির উপাখ্যান (বৈশাখ ১৩৬৩)
সতু বদ্যির উপাখ্যান (বৈশাখ ১৩৬৩)
Post a Comment